শিলাইদহ-সাজাদপুর-পতিসর-পূর্ববঙ্গের এই তিন এলাকায় জমিদারি কর্মসূত্রে রবীন্দ্রনাথের যাতায়াত ও অবস্থানের কথা সবারই জানা। কিন্তু কবির কর্মভূমি কীভাবে তাঁর মানসভূমির গড়নের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লো সেটা গভীরভাবে তলিয়ে দেখা বিশেষ হয়নি। রবীন্দ্রনাথের পরিব্যাপ্ত শিল্পমানস ও জীবনবেদ বুঝতে হলে তাঁর জীবনের এই পর্বের গভীর অনুধ্যান দরকার। এক্ষেত্রে শিলাইদহ সাজাদপুরের ওপর গবেষক বিশ্লেষকদের দৃষ্টিপাত ঘটলেও পতিসর ছিল বরাবরই উপেক্ষিত। অথচ এই পতিসরেই রবীন্দ্রনাথের পল্লীচিন্তা ও স্বদেশ-ভাবনা আশ্চর্য সংহতি অর্জন করেছিল। পূর্ববঙ্গের নিভৃততম গ্রামের পরিবেষ্টনে জীবনের নিবিড় পাঠ গ্রহণ করেছিলেন তিনি। তাঁর নিজেরই ভাষায়, ‘দেশের সত্যিকারের রূপ’ তিনি যেন প্রত্যক্ষ করলেন পতিসরে এসে, তাঁর হৃদয়ে প্রতিধ্বনি হয়েছিল ‘সুখ-দুঃখের বাণী নিয়ে মানুষের জীবনধারার বিচিত্র কলরব’। ঘটেছিল কবিসত্তা ও কর্মীসত্তার এক ভিন্নতর উদ্ভাসন। দেশকে ভেতর থেকে জাগাবার যে স্বাপ্নিক প্রয়াস তাঁর, সেটা বাস্তবে রূপদানে তিনি সচেষ্ট হয়েছিলেন পতিসরের সমাজে। রবীন্দ্র-জীবনধারার এই অনালোচিত অধ্যায় নিয়ে প্রথম পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ রচনা করলেন আহমদ রফিক, নিষ্ঠাবান রবীন্দ্র-গবেষক ও ধীমান প্রাবন্ধিক। রবীন্দ্রজীবন ও রবীন্দ্রভাবনার বৈশিষ্ট্য অনুধাবনে অপরিহার্য বিবেচিত হবে ব্যতিক্রমী এই গ্রন্থ।
Reviews
There are no reviews yet.