বাঙালির পরম ত্যাগ ও মহত্তম জাগরণের গৌরব পরতে পরতে মিশে আছে মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাধারায়। এই কাহিনী কোনো একক বীরগাথা কিংবা নিছক শোকগাথা নয়। লক্ষ মানুষের জীবন ছত্রখান কর দিয়েছিল যে-ঝড়, লক্ষ মানুষের ত্যাগ-তিতিক্ষা ও সংগ্রামী প্রত্যয়ই আবার যুগিয়েছিল সেই দুর্যোগ অতিক্রমের জাগরণী শক্তি। মুক্তিযুদ্ধের বাস্তবতার পরিচয় পরিচয় পেতে হলে আমাদের তাই অযুত মানুষের চিত্তের কুঠুরিতে কান পাততে হবে, শুনতে হবে লক্ষ হৃদয়ের স্পন্দন। কত বিচিত্রই-না এইসব অভিজ্ঞতা, কত আলাদাই-না প্রতিটি দুঃখভোগের কাহিনী। স্মৃতিসূত্রে এমনি পুষ্পরাজি একত্রে গেঁথেই আমরা রচনা করতে পারবো একাত্তরের মালিকা। এই প্রতীকী কাজটি সম্পাদনের দায়িত্ব নিয়েছেন তাজুল মোহাম্মদ ও তাঁর সহযোগীরা। সব অর্থেই কাজটি প্রতীকী, বিন্দুতে সিন্ধু-দর্শনের প্রয়াস ছাড়া আর কোনো বিকল্পও নেই এক্ষেত্রে। পঁয়ত্রিশজনের যে স্মৃতিমালিকা এখানে নিবেদিত হয়েছে কোনো অর্থেই তাকে প্রতিনিধিত্বশীল বলা যাবে না। বস্তুত মুক্তিযুদ্ধের বিশালতার প্রেক্ষিতে কোনো একক গ্রন্থ এমনি প্রতিনিধিত্বের দাবিও করতে পারে না; কিন্তু একাত্তরের জীবনবাস্তবতার এটা এক পরিচয় বটে, সাধারণজনের নানাধর্মী অভিজ্ঞতার আলোকে সময়ের ছবিটি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা। পাঠকগোষ্ঠী, বিশেষত নবীন প্রজন্মের উৎসুক পাঠকের কাছে, একাত্তরের এই হার্দ্যিক স্মৃতিলিপি সমাদৃত হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
Reviews
There are no reviews yet.